15.7 C
New York
Saturday, September 30, 2023

বাচ্চা না হওয়ার জন্য কালো জাদু

- Advertisement -

- Advertisement -
- Advertisement -

সত্য ঘটনা অবলম্বনে, গল্পের প্রয়োজনে কিছু বেশি কম করা হয়েছে।

আমার বিয়ে হয়ছ আজ ৫০ বছর।আমার বিয়ে হওয়ার ৪৫ বছর পর আমি মা হই ব্যাপারটা অবাক লাগছে তাই না।
আসেন এবার পুরো টা শোনেন।
.
আমার ছেলে বেলা বা বিয়ে এটা আর বাকি ৫ টা মেয়ের মতো। এখানে বলার কিছুই নেই।
.
আমি আর আমার বর ছিলাম খুব সুখি। বিয়ের পর থেকে সে আমায় খুব ভালো বাসতো। আমরা বিয়ের পর থেকেই বেবি চাইতাম। কিন্তুু হতো না। এভাবে অনেক বছর কাটে কিন্তুু হতো না। আমাকে চারদিক থেকে মানুষ নানা রকম কথা বলতো।
.
আমি শুধু তাহাজ্জুদ পড়ে কান্না করতাম।
কত ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়েছি হিসাব নাই। এমনকি ১০ বারের উপর ওমরা হজ্জও করেছি বেবির নিয়ত করে। কিন্তুু আল্লাহ আমায় নিরাশ করে। আমি আজমীর শরীফেও গিয়েছি খাজার দরবারে। কথিতো আছে খাজার দরবার থেকে নাকি কাওকে খালি হাতে ফেরায় না। আমি খাজার দরবারে নিয়ত করে যেতাম বেবির জন্য ৭ বার গিয়েছি কিন্তুু বেবি হয়নি।
.
অনেক দেশ বিদেশের ডাক্তার দেখিয়েছি বেবির জন্য কিন্ত বেবি হয়নি।
আমার বর চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতো, তাই মোটামুটি টাকা ছিলো। আমি জীবনে এত-এত টাকা উড়িয়েছি বেবির জন্য বলে বোঝাতে পারবো না। কিন্তুু আমার বর কখনও তাবিজ তুমার এগুলো নিতে চাইতো না। আমিও তাই যেতাম না। আমার বরের অনেক সম্পত্তি, টাকা পয়সা আছে।
.
বলে রাখি আমার বরেরা ২ ভাই আমার বর ছোটো। আমার বরের বড় ভাই আছে। আমার জা টা খুব ভালো। বোনের মত। কখনও আমরা জায়ে-জায়ে ঝগড়া করিনি। আমার বর থেকে আমার জা দের টাকা পয়সা একটু কম ছিলো। কিন্তুু কখনও আমরা তাদের নিচু চোখে দেখিনি।
.
আমার বিয়ের আগে আমার শাশুড়ি মারা যায়। আমার শ্বশুর বিয়ের ৫ বছর পর মারা যায়। আমার জায়ের ৩ টা ছেলে মেয়ে সত্যি বলতে আমার বড় জাদের পুরো খরচ টা আমরা চালাতাম। আমার বড়ো ভাসুর ছিলো জুয়ারি। সারাদিন জুয়া খেলতো আর টাকা উড়াতো। তার ছেলে মেয়ে গুলো আমরাই মানুষ করতাম।
.
আমি কখনও শ্বশুর বাড়ির কোনো দাওয়াতে যেতাম না। কারণ সবাই আমাকে বন্ধ্যা বলতো। এভাবে বিয়ের ২০ বছর কেটে যায়। আমিও ধরে নিয়েছিলাম হয়তো আমি বন্ধ্যা কিন্তুু ডাক্তারি রিপোর্ট অনুযায়ী আমাদের কোনো সমস্যা ছিলো না। আমারও বয়স বাড়তে লাগলো আর আমার বরের ও। আমার বিয়ের সময় আমার বয়স ছিলো ১৫ আর বরের ২১। আমার শ্বশুর শখ করে তার ছেলেকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়েছে। জীবনে একটা বাচ্চার জন্য কত হাহাকার করেছি।
.
আমার আর বরের চোখের পানি একমাত্র আল্লাহ আর মক্কা শরীফ জানে।
আমার পিরিয়ড ইরেগুলার ছিলো। কিন্তুু ডাক্তাররা কোনো কারণ খুঁজে পেতো না। আমার পিরিয়ড হইতো ১ বছর পর-পর। ১ মাস বা ২ মাস থাকতো।
কিন্তুু বিয়ের আগে এমন ছিলো না। প্রায় সময় আমার জা আমাকে বিভিন্ন তাবিজ লেখা খাওয়াতো। এগুলো না-কি বাচ্চা হওয়ার জন্য, আমিও খেতাম। সবাই আমাকে বন্ধ্যা ডাকতো। অনেকে বলতো একটা বাচ্চা পালক নাও। কিন্তুু সেটা কখনও আমার বর চাইতো না। তার কথা হলো নাহলে নাই কিন্তুু বাচ্চা পালক নিতে পারবো না। আমার ভাইয়ের ছেলে মেয়েরাই সব আমাদের। ওরাই মাটি দেবে আমাদের।
.
এভাবে সুখে দুঃখে মানুষের কথায় বিয়ের ৪৪টা বছর কেটে যায়। আমার বরও বুড়ো কারণ বরেরও ৬৫ এর কাছাকাছি বয়স হয়ে যায় আর আমারও ৫৯ হয়।
বাচ্চার আশা একদমই ছেড়ে দেই। ইদানিং বরের শরীর টাও ভালো না হয়তো আর বাঁচবে না। সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাদের জায়গা-জমি টাকা পয়সা সব আমার ভাসুরের ছেলেদের নামে লিখে দেবে। কিন্তুু তার আগে হজ্জে যাবো বড় হজ্জ করবো। হজ্জ থেকে এসে জায়গা জমিন কিছু ভাসুরের ছেলেদের নামে দিয়ে বাকি গুলো আল্লহর রাস্তায় দান করে আমরা দুজন আল্লাহর রাস্তায় মুসাফির হবো।
.
আমরা যথা রীতি হজ্জে যাই।
যেদিন শ্বাইতানকে পাথর মারা হবে সে দিন খুব ঝড় হয়। আমরা শাত্বানকে পাথর নিক্ষেপ করে কাবার সামনে বসলাম। খুব বৃষ্টি। কান্না করে করে আল্লাহকে বললাম এই জীবনে তো একটা বাচ্চা দিলা না, কত চাইলাম তোমার কাছে। কতো মানুষের কথা এ জীবনে শুনাইলা। তারপর ও রহমত করলা না, অসুবিধা নাই হয়তো আমরা জাহান্নামি তাই দোয়া কবুল করো নি। তোমার সামনে বলতেছি বাচ্চা দাও নি এ জীবনে আর কখনও কিছু তোমার কাছে চাইবো না। মৃত্যু টা দিও। বাচ্চার দোয়া কবুল করো নি কিন্তুু মৃত্যু দিও এটা কবুল করিও। আর নিঃসন্তান থাকার ইচ্ছে নেই আল্লাহ বড়ো অভিমান তোমার উপর।
.
এটা বলে আমরা রুমে আসলাম। পরে ফরজ তাওয়াফের পর সাফা মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মাঝে দৌড়ানোর পর আমরা ক্লান্ত হয়ে পাথরের উপর একপাশে বসলাম।
.
তখন এক পাকিস্তানি আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে কি যেনো বললও আরবিতে না উর্দূতে বুজলাম না। তখন আমাদের পাশে এক প্রবাসী ভাই ছিলো তখন তিনি বললেন যে তোমাদের উপর কালো যাদু করছে। বাচ্চা না হওয়ার জন্য। আমরা দুজনে ভয় পেয়ে গেলাম হায় আল্লাহ কি বলে?
.
এর পর পাকিস্তানি লোকটা বলতে লাগলো, তোমরা তো মনে হয় আজ বহু বছর ধরে কালো জাদুতে আক্রান্ত তোমার জরায়ু আর তোমার বরের বীর্য দানি কালো জাদু দ্বারা বন্ধ করে রাখছে যাতে কখনও আমরা সন্তানের বাবা মা হতে পারবো না যদি এগুলো না কাটাই।
.
তখন আমি কান্না করে দিলাম। আর বিলিভ করলাম যে আল্লাহর ঘরে কেউ তো মিথ্যা বলবে না। আমরা দুজনে ওনার ভাষা বুঝতেছিলাম না। সেই প্রবাসি ভাই ওনার কথা গুলো বাংলাতে বলতেছিলো। তখন আমরা জিজ্ঞেস করলাম যে কে করছে উনি তখন নাম বলে নাই। বললাম এটার থেকে পরিত্রান এর উপায় কি? তখন তিনি আমাকে কিছু রুকইয়াহ এর পানি পড়া দিলেন আর বললেন এগুলো খেও আর গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করো ৭ দিন, তাহলেই ঠিক হয়ে যাবে।
.
আর যখনি মনে হবে কেউ কিছু করতে চেষ্টা করছে তখনএটা তুমি আর তোমার পরিবারের সবাই খাবা ও গোসল করবা এই পানি সারা জীবন রাখবা। তবে তোমরা ছাড়া অন্য কেউ যাতে ব্যবহার নাকরে।
.
তখন ২০০৬ সাল।
হজ্জ শেষ করে দেশে আসলাম।
৭ দিন গোসল করলাম আল্লাহর রহমতে আমি বাচ্চা কনসিভ করলাম। সবাই অবাক এই বুড়ো বয়সে বাচ্চার মা।
.
তখন আমার জায়ের রুপ বদলাতে লাগলো।
কারণ হজ্জ থেকে আসার পর তার বাচ্চা দের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার কথা ছিলো। তারা কাগজ পত্র রেডি করে রেখেছিলো। কিন্তুু আমার বর আর তা করে নি।
.
ডাক্তাররাও অবাক হয়ে যায় এই বয়সে বাচ্চা।
আমাকে তখন ডাক্তাররা নিবিঢ় পর্যবেক্ষনে রাখে। আমার মনে আসে আমার গর্ভবতীকালিন সময় টাতে আমি খাট থেকে ও নামি নি। আল্লাহর অশেষ রহমতে দীর্ঘ ৪৫ বছর পর ২০০৭ এ ৩ টা ছেলের মা হলাম। একসাথে ৩ টা। সারা এলাকায় তখন এই কথা ছড়িয়ে পড়ে। আমার বড়ো জা আমার বেবি গুলোকে কোলে ও নিলো না।
.
আমরা বুড়ো বুড়ি যেনো ১৬ বছরের যুবক যুবতি হয়ে গেলাম মনের দিক থেকে।
ততদিনে আমার বর সরকারি চাকরি থেকে অবসরে।
.
২০১০ এ আমি আবার বাচ্চার মা হলাম তাও ২ টা মেয়ে। শরীরের অবস্থা অনেক খারাপ ছিলো গর্ভবতী থাকা অবস্থায়।
.
একদিন আমার জা আর ভাসুরের মধ্যে কথা শুনতে পাই তারা নাকি সম্পত্তির জন্য আমাদের বাচ্চা হওয়াটা কালো জাদু দিয়ে বন্ধ করে রাখছিলো।
.
পরে অবশ্য তারা মাফ চায়, আমরাও মাফ করে দেই।
আল্লাহর রহমতে এখন ভালো আছি।
তবে আমার বরের অবস্থা ভালো না এখন হাঁটতে পারে না।
আমার বড় ছেলেদের বয়স এখন ১৩ বাহিরে গেলে অনেকে আমাদের জিজ্ঞেস করে এটা কি আপনাদের নাতি!
আর হ্যা আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি অভিমানে অনেক কথা বলেছি।
এখন আল্লাহর কাছে একটাই প্রার্থনা আমরা যাতে ২ বুড়াবড়ি ছেলে-মেয়ে গুলো কে বিয়ে দিয়ে যেতে পারি।
আল্লহ যাতে আমাদের সুস্থ আর হায়াত রাখেন।
আমার বাচ্চা গুলো খুব ভালো একদম শান্ত ছোটবেলা থেকে তারা কখনও আমায় যন্ত্রনা করে না।
সবাই দোয়া করবেন আমাদের জন্য।
আর হ্যা নিরাশ হবেন না। আমি ৬০ বছরে মা হয়েছি। সকল ক্ষমতা আল্লহরই।

- Advertisement -

(#বিঃদ্র – হায়েজ/নেফাস অবস্থায় রুকয়া শুনতে পারবে।
দোয়া হিসেবে চার কুল আয়াতুল কুরসি ও পড়তে পারবে।
এবং সকাল বিকালের নির্ধারিত দোয়াও পড়বে)

Collected by Abu Hanif Biplab

- Advertisement -

Related Articles

1 COMMENT

Leave a Comment:

Stay Connected

22,025FansLike
3,874FollowersFollow
18,600SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker

Refresh Page