একদা সয়াবিন তৈল সরিষার তৈলের সহিত প্রেমে পড়িয়াছিল, প্রেমে পড়িয়া সয়াবিন তৈল সরিষার তৈলের সহিত সংসার পাতিবার স্বপ্ন দেখিয়াছিল, সুখে দুঃখে একে অপরের সঙ্গী হইয়া থাকিবে আগুনে পুড়িয়া মরিতে হইলে একসঙ্গে মরিবে।
তথাপি একদিন সরিষার তৈলকে রান্নাঘরে একা পাইয়া সয়াবিন তৈল তাহার মনের কথা ব্যক্ত করিয়া কহিল…
সরিষার তৈল সয়াবিন তৈলের সাহস দেখিয়া নিজেই রাগিয়া আগুন হইয়া গেলো শুধু জ্বলিবার বাকি রাখিয়া বলিল…
নিজেকে কখনো আয়নায় দেখিয়াছো কিরূপ তোমার চেহারা.. আর তুমি কোথায় থাকো, সারাক্ষণ রান্নাঘরের চিপায় পড়িয়া থাকো নয়তো ফুটপাতের দোকানগুলোতে, আর তোমাকে দিয়া কী রান্না হয় বলো? অল্প করিয়া মাছ, মাংসে তোমাকে ব্যবহার করিয়া থাকে আর ফুটপাতে তোমারে দিয়া নিম্ন মানের পেয়াজু, বেগুনি ভাজিয়া থাকে… আর তোমার অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের জন্য তো সচেতন মানুষজন তোমাকে ছুঁয়েও দেখিতে চাহে না…
আর আমার দিকে তাকাইয়া দেখো মানুষ সরষে ইলিশ রাঁধিতে হইলে আমাকেই লাগে, সব ধরণের ভর্তা আমাকে ছাড়া কিছুতেই চলে না, মানুষজন তাহাদের গায়েও আমাকে মাখিয়া লয় আমার এমনই গুণ..
আর তুমি জীবনে কোনদিন মানুষের গায়ে যেতে পারিয়াছো বলো?
তোমার সাহস হয় কেমন করিয়া আমার সহিত সংসার করিবার স্বপ্ন দেখিতে।
সেইদিনের সেই অপমান সয়াবিন তৈল নিরবে সহ্য করিয়াছিল আর মনে মনে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিল যে সরিষার তৈলকে সে একদিন নিজের মূল্য বুঝাইয়া দিবে… তাহাকে দেখাইয়া দিবে মানুষজন কেমন করিয়া তাহার জন্য হাহাকার করে। আজ সেইদিন আসিয়াছে সয়াবিন তৈল বীরদর্পে সরিষার তৈলকে তাহার মূল্য বুঝাইয়া দিতে সক্ষম হইয়াছে…
তাই বলি গরীব, কোলেস্টেরল বেশি বলিয়া কখনো সয়াবিন তৈলকে অবহেলা করিবেন না, কেউ নিজে থেকে কোলেস্টেরল বেশি নিয়া জন্মায় না…
রম্য গল্প: তৈলাক্ত প্রেম
লেখা:ইয়ন্তি নিঝুম