7.4 C
New York
Saturday, December 9, 2023

এক নির্যাতন

- Advertisement -
- Advertisement -
- Advertisement -

ছোট খাটো একটা চাকরি করি। গত মাসে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি, প্রায় ৬ লক্ষ টাকা খরচ করে। আজ ইফতারি দিয়েছি জামাইয়ের বাড়িতে, প্রায় ১৫,০০০৳ টাকা খরচ করে। একটু আগে মেয়ের ফোন।

  • বাবা, কেমন আছেন?
  • হ্যাঁ, মা ভালো। তুই ভালো আছিস তো…
  • আছি বাবা ভালো।

  • এইভাবে বলছিস কেনো? তোর শ্বশুররা খুশি হয়েছে তো?
  • ওরা কিছু বলেনি। (জামাইয়ের ফুফু) বলেছে ইফতারি একটু কম
    হয়েছে।
  • (তখন আমার চোখের পানি টলটল করছিল) আচ্ছা মা বলিস, পরের বার থেকে আরো বাড়িয়ে দিবো।
  • বাবা শুনো। তুমি আমাদের বাড়িতে ঈদে কাপড় দিবে না?
  • হ্যাঁ মা, দিবো। কেনো?
- Advertisement -

  • তুমি কাপড় দিওনা। খালা (জামাইয়ের খালা) বলেছে, কাপড় দিলে সবার পছন্দ হবে না। কাপড় না দিয়ে টাকা দিয়ে দিতে। ৩০,০০০৳ টাকা দিলে, সবার নাকি হয়ে যাবে।
  • আচ্ছা মা। তুই চিন্তা করিস না। আমি এখনও বেঁচে আছি।
    (আমার বুঝতে দেরী হলো না, এতক্ষণে মেয়ের চোখের অনেক জল গড়িয়ে পড়েছে।)
  • আচ্ছা বাবা, এখন রাখি।
  • আচ্ছা মা, ভালো থাকিস।
    রাতে ছোট ছেলে নামাজ থেকে আসলো।

  • বাবা, তুমি আছো?
  • হ্যাঁ, আছি। কিছু বলবি?
    হ্যাঁ, ঈদের পর ২য় সপ্তাহে সেমিস্টার ফাইনাল। বেতন, ফর্ম ফিলাপ ও অন্যান্য সহ ২৫ হাজার টাকা লাগবে। আমার টিউশনির কিছু টাকা আছে। আপনি ২০ হাজার দিলে হবে।
  • আচ্ছা দেখি। খেয়ে ঘুমিয়ে পর।


  • না বাবা, লেট হলে এক্সাম দিতে পারবো না।

নতুন জামাই! বাড়িতে মৌসুমী ফলমূল দিতে হবে। তাতে ১০-১৫ হাজার টাকা দরকার। ঈদের পরে আবার কোরবানি, মেয়ের বাড়িতে গরু দিতে হবে। গরুর যে দাম, কমপক্ষে ৫০,০০০৳ টাকা তো লাগবে। আবার নিজের জন্য ও একটা লাগবে।

এইখানে শেষ নয়, আরো রয়েছে মেয়ের বাড়িতে দেওয়ার বিভিন্ন মৌসুমে বিভিন্ন আয়োজন।

এই সব চিন্তা করতে করতে না খেয়ে শুয়ে পড়েছি। নাবিলার মা অনেক কিছু জিজ্ঞেস করেছিলো, কিছু না বলে শুয়ে পড়েছি।

মাথায় একটা বিষয় কাজ করছে। টাকা! টাকা! আর মেয়ের সুখ।

এইভাবে রাত ১২ টা। হঠাৎ করেই বুকের ব্যথাটা বেড়ে গেছে। ধীরে ধীরে আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি। আমার হাত-পা গুলো অকেজো হয়ে আসছে। আমার সারা জীবনের অনেক স্বপ্ন অসমাপ্ত রয়ে গেছে।

সেই চিন্তা গুলো এখনো আমার পিছু ছাড়ছে না।


পরদিন সকাল বেলা। সবাই কান্নাকাটি করছে। আমার ছোট মেয়ে আর আমার প্রিয় স্ত্রী সব চেয়ে বেশি কাঁদছে। শুনলাম বড় মেয়ে ইতি এরই মধ্যে এসে গেছে। সবার দিকে চেয়ে থাকলাম। অনেক কিছু বলতে চাচ্ছি। কিন্তু কিছুই বলতে পারতেছিনা। ঠিক ২ মিনিট পর আর কিছু জানি না।
এইভাবে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক বাবা। আর বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে

শত শত ছেলে-মেয়ে। হয়তো অনেকে এখন ও জানে না, তাদের বাবার মৃত্যুর রহস্য।

এই ভাবে প্রতিনিয়ত আমরা হারাচ্ছি আমাদের প্রিয় বাবাদের।

প্রতিটা ছেলের কাছে আমার অনুরোধঃ


বিয়ের আগে অথবা পরে শ্বশুর বাড়ি থেকে কোনো কিছুর দাবি করবেন না
কারনঃ
একটা মেয়ে একটা বাবা মায়ের কলিজা …
একজন বোন একটা ছেলের হ্নদপিন্ড…
সেই মানুষটি কে আপনি নিয়ে যান
পরিবার টা কে শূন্য করে…
যে মেয়েটা বাবার বাড়িতে ভাত খেয়ে পানি টুকু ফেলতো না
সেই মেয়েটি আপনার বাড়িতে গিয়ে
রান্না করে প্লেট ধোয়ার কাজ করে
বাড়ি টা গুছিয়ে রাখে
আপনার পরিবারের সকল সদস্যের খেয়াল রাখে
কেনো অযথা
সেই মেয়েটির উপর নির্যাতন করেন

- Advertisement -

Related Articles

Leave a Comment:

Stay Connected

22,025FansLike
3,912FollowersFollow
18,600SubscribersSubscribe
- Advertisement -

Latest Articles

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker

Refresh Page