টান টান উত্তেজনার ফাইনালের মধ্যে দিয়ে পর্দা নেমেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের। ফরচুন বরিশালকে এক রানে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলেছে ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আসরজুড়ে ব্যাটে-বলে যারা আলো ছড়িয়েছেন তাদের মাঝে ১১ জন নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এ আসরের সেরা একাদশ।
একাদশে থাকা তিন বিদেশি ক্রিকেটার হলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের উইল জ্যাকস, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সুনীল নারাইন এবং ফরচুন বরিশালের মুজিব উর রহমান। একাদশে শিরোপাজয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের চার ক্রিকেটার, রানার আপ ফরচুন বরিশাল, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স, খুলনা টাইগার্সের দুই ক্রিকেটার ও মিনিস্টার ঢাকার এক ক্রিকেটার জায়গা পেয়েছেন।
এক নজরে বিপিএল ২০২২ এর সেরা একাদশ
উইল জ্যাকস (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স) : এ আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এ ডানহাতি ইংলিশ ওপেনার। ১১ ইনিংসে ৪১.৪০ গড়ে ও ১৫৫.০৫ স্ট্রাইক রেটে ৪১৪ রান করেছেন তিনি। পুরো আসরজুড়েই ধারাবাহিক ছিল তার ব্যাট।
তামিম ইকবাল (মিনিস্টার ঢাকা) : পুরো আসরে মিনিস্টার ঢাকার একমাত্র ধারাবাহিক পারফর্মার তামিম ইকবাল। আসরের সর্বোচ্চ পাঁচ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান। ৯ ইনিংসে ১৩২.৫৭ স্ট্রাইক রেট রেখে তামিম করেছেন ৪০৭ রান। আসরের চারটি শতকের মাঝে একটির মালিক এ বামহাতি ওপেনার।
সুনীল নারাইন (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স) : ফাইনালের নায়ক সুনীল নারাইন ৭ ইনিংস ব্যাট করে ৩১.৮০ গড়ে করেছেন ১৫৯ রান। ১৯৮.৭৫ স্ট্রাইক রেট বলে দেয় কতটা বিধ্বংসী ছিলেন তিনি। কোয়ালিফায়ারে ১৬ বলে ৫৭ ও ফাইনালে ২৩ বলে ৫৭ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে বিপক্ষ দলকে বিধ্বস্ত করেন নারাইন। বল হাতে নারাইন ছিলেন চরম মিতব্যয়ী। ৮ ইনিংসে ৪ উইকেট শিকার করা নারাইনের ইকোনমি ৫.৭১।
মাহমুদুল হাসান জয় (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স) : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ৯ ইনিংসে ২৩৫ রান করেছেন এ ডানহাতি তরুণ ব্যাটসম্যান। এ আসরে ১১৫.১৯ স্ট্রাইক রেট ও ২৬.১১ ব্যাটিং গড় তার।
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক) (ফরচুন বরিশাল) : ফরচুন বরিশালের হয়ে দারুণ অধিনায়কত্ব করেছেন সাকিব। ব্যাটে-বলেও ছিলেন দুর্দান্ত। অসাধারণ পারফর্ম করে টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারও নির্বাচিত হয়েছেন এ অলরাউন্ডার। ১১ ইনিংসে ব্যাট হাতে ২৮৪ রান করার পাশাপাশি বল হাতে শিকার করেছেন ১৬ উইকেট। এ নৈপুণ্যের পথে টানা পাঁচ ম্যাচে ম্যাচসেরা ক্রিকেটার হওয়ার কীর্তিও গড়েছেন সাকিব।
ইয়াসির আলি (খুলনা টাইগার্স) : খুলনা টাইগার্সের মিডল অর্ডারের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন ডানহাতি ইয়াসির আলি। ৮ ইনিংস ব্যাট করে ৩১.২৮ গড়ে ও ১৩৯.৪৯ স্ট্রাইক রেটে ২১৯ রান তুলেছেন ইয়াসির। অপরাজিত ৫৭ তার এ আসরের সর্বোচ্চ ইনিংস।
মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক) (খুলনা টাইগার্স) : খুলনা টাইগার্সের উইকেটরক্ষক ও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ব্যাট হাতে ৯ ইনিংসে করেছেন ২৫১ রান। এর মাঝে দুই ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন তিনি। ব্যাটিং গড় ও স্ট্রাইক রেট যথাক্রমে ৩৫.৮৫ ও ১২৯.৩৮।
মুজিব উর রহমান (ফরচুন বরিশাল) : পুরো আসরজুড়ে দারুণ বোলিং করেছেন স্পিনার মুজিব উর রহমান। ৮ ইনিংসে মাত্র ৫.৮১ ইকোনমি রেটে শিকার করেছেন ১০ উইকেট। পাওয়ারপ্লেতে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার কাজটাও করেছেন দারুণভাবে।
মুস্তাফিজুর রহমান (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স) : ১১ ম্যাচে ১৯ উইকেট শিকার করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বামহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ২৭ রানে ৫ উইকেট শিকার করে কোনো ম্যাচের সেরা বোলিং ফিগারের মালিকও তিনি।
মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স) : ৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট শিকার করেছেন তরুণ বামহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ডেথ ওভারে নিজের কার্যকারিতাও প্রমাণ করেছেন তিনি।
শহিদুল ইসলাম (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স) : ৮ ম্যাচে এ ডানহাতি পেসারের উইকেট ১৪ টি। ফাইনালের শেষ ওভারেও স্নায়ুর লড়াইয়ে জিতেছেন শহিদুল।
দ্বাদশ ক্রিকেটার : মুনিম শাহরিয়ার
এছাড়া আন্দ্রে ফ্লেচার, মেহেদী হাসান রানা,ডোয়াইন ব্র্যাভো, মঈন আলীরাও ছন্দে ছিলেন। তবে টিম কম্বিনেশনের জন্য এ একাদশে নেই তারা।
কেউ বাদ পড়লে অবশ্যই কমেন্টে যানাবেন